পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমাতে কেন্দ্রের শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই পালটা দাবি জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে এতে সাধারণ মানুষের কোনও লাভ হবে না। বলেন, ‘কেন্দ্রের আগে লিটারে অন্তত ১০ টাকা পেট্রোল ডিজেলের দাম কমানো উচিৎ। পেট্রোপণ্যের ওপর থেকেও সেস তুলে নিতে হবে।’
পেট্রোপণ্যে লিটারপ্রতি দেড় টাকা শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। বিক্রয়কারী সংস্থাগুলির তরফেও ১ টাকা করে দাম কমানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। অর্থাৎ মোট শুল্ক কমানো হল আড়াই টাকা। পাশাপাশি রাজ্যগুলিকেও সমপরিমাণ দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেটলি। কিন্তু এতে রাজি নন মমতা। তিনি কেন্দ্রকে এক্সাইজ ডিউটি বা শুল্ক কর বৃদ্ধির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর ওরা দশ টাকা অতিরিক্ত কর বসিয়েছে, ওদেরকেই ১০ টাকা কমাতে হবে দাম।’ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম ১৫ মাসের মধ্যে মোট ১১ বার এক্সাইজ ডিউটি বা শুল্ক বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। এই ১৫ মাসে পেট্রোলে শুল্ক বেড়েছিল ১২ টাকা ৪৭ পয়সা, আর ডিজেলে বেড়েছিল ১৩ টাকা ৪৭ পয়সা। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করলেও শুল্ক আর কমায়নি মোদি সরকার। গত দু’বছরে জ্বালানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে মাত্র ১ বার তাও লিটারপ্রতি ২ টাকা করে। মমতা সেটাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতাদের।
সে তুলনায় আগেভাগে পদক্ষেপ করেছিল কয়েকটি রাজ্য। কিছুদিন আগেই সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে লিটারপ্রতি ১ টাকা করে দাম কমানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য একাধিক রাজ্যও নিজেদের মতো করে দাম কমিয়েছে। এরপর নতুন করে জেটলির অনুরোধ রেখে দাম কমাতে গেলে চাপে পড়বে রাজ্যের অর্থনীতিও, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিলিগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে তাই চাঁছাছোলা ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লোক দেখানোর জন্য আড়াই টাকা দাম কমিয়েছে কেন্দ্র। আড়াই টাকায় কিছু হয় না। বলছে, রাজ্যকে কর কমাতে হবে, তাহলে রাজ্যের কাছ থেকে এত টাকা কেটে নিয়ে যায় কেন? সাধারণ মানুষের সঙ্গে উপহাস করছে আড়াই টাকা কমিয়ে। ক্ষমতায় আসার পর ওরা দশ টাকা অতিরিক্ত কর বসিয়েছে, ওদেরকেই ১০ টাকা কমাতে হবে দাম’।