মাঝে আর মাত্র দুটি রোববার। তারপরেই বাঙালির বহু প্রতিক্ষীত শারদোৎসব। শশব্যস্ত হয়ে তাই চলছে পুজোর কেনাকাটা। উত্তরের শ্যামবাজার-হাতিবাগান বলুন কিংবা দক্ষিণের গড়িয়াহাট; ভিড়ে জমজমাট সর্বত্র। ফ্যাশনিস্তারা যেমন নেমে পড়েছেন পথে পথে। বাদ যাচ্ছেন না সাবেক কর্তাগিন্নিরা, কচিকাঁচারা। শহরের শপিং মলগুলিতে পায়ে পায়ে ভিড়। নতুন পোশাক, নতুন জুতো, নতুন নতুন অ্যাক্সেসরির সঙ্গে সে সব মলে মহাসমারোহে শুরু হয়ে গেছে হরেক ইভেন্ট। নাচ,গান-বাজনা, মোমো খাওয়ার প্রতিযোগিতা, লটারি, একটা কিনলে দুটো ফ্রি; বাঙালি যা যা চায়, যাতে যাতে খুশি হয়, সব কিছুরই দেদার ব্যবস্থা ইতিউতি। তবে এহেন আকর্ষক অফারে পিছিয়ে নেই কলকাতার সাবেক বাজারগুলিও। নিউ মার্কেট বা গড়িয়াহাটের ছোট দোকানেও মিলছে গিফট। শপিং মল, বাজার ছাড়িয়ে এবার পুজোর বিকিকিনি চলছে ট্রামেও। ট্রামে চেপে কলকাতা ঘুরতে ঘুরতে শপিংও বেশ মজার।
তবে ধর্মতলা চত্বরের ভিড়ের ছবিটা ভয়াবহ। হটপ্যান্ট, টিশার্টের তরুণীরা অষ্টমীর সকালে ষোলোআনা বাঙালি সাজতে ফুটপাথের গয়নার দোকানে লাল-সাদা শাড়ির সঙ্গে মানানসই দুল কিনতে ব্যস্ত। চলছে জরির কাজ করা জমকালো বটুয়া ও ব্যাগের দরাদরিও। গ্র্যান্ড হোটেলের নিচে তো সারা ফুটপাথ জুড়েই গিজগিজ করছে লোক। দোকানে দোকানে ঝুলছে পালাজো, কোল্ড শোল্ডার থেকে শুরু করে লম্বা লম্বা গাউনের মত বিভিন্ন ড্রেস। রয়েছে পুরুষদের ডেনিম, চিনোস এবং হরেক রকম শার্ট ও টিশার্টও। গড়িয়াহাটেও একই অবস্থা। সব নামী-দামি শাড়ির দোকানগুলিকে কাচের বাইরে থেকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনও পুজোমণ্ডপ। আর ফুটপাথে যেন লোকের মেলা। জাঙ্ক জুয়েলারির দোকানগুলিতে উপচে পড়ছে কলেজ পড়ুয়া তরুণীদের ভিড়। অনলাইন কেনাকাটার যুগে বাজারে এত ভিড়? চোখে না দেখলে বিশ্বাসই হবে না।
হাওয়ায় ভাসছে পুজোর গন্ধ। আগমনী সুর। বাঙালি এখন অপেক্ষায় সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। তাই রাস্তাঘাটে, বাসে-ট্রামে-ট্রেনে, দোকানে-বাজারে ঝাঁপিয়ে নেমে পড়েছে সব্বাই। শপিং মল থেকে বাজার, সর্বত্রই এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। শহর কলকাতা বাস্তবিক ভাবেই এ মুহূর্তে কলকল্লোলিনী। এবার ঢাকে কাঠি পড়ল বলে।