পুজোর শপিং শুরু করে দিয়েছেন? কাজের ফাঁকে যখনই সময় পাচ্ছেন একবার করে শপিং মল, ডিজাইনার বুটিক গুলোতে ঢুঁ মারছেন নিশ্চয়। তা করুন। তবে এবারে পুজোর বাজার করার সময় শপিং করার আদব কায়দা গুলোও মাথায় রাখুন। ওই যাকে আমরা এটিকেট বলি আরকি। হ্যাঁ শপিং করার সময়ও একটু আধটু শিষ্টাচার মেনে চলতে হয় বৈকি।
বিরক্তিতে একটু কি চোখটা কুঁচকে গেলো? ভেবে দেখুনতো, কোথাও কেনাকাটা করতে গিয়ে, আপনি যদি সেই স্টোরের কর্মীদের থেকে যথাযথ সহযোগিতা না পান, তা হলে তা নিয়ে কত বিরক্তি প্রকাশ করেন। এমনকি সময় সময় সেই নির্দিষ্ট কর্মীর দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও করে থাকেন। কিন্তু বিপরীত দিকটাও ভেবে দেখবেন। আপনার কোনও আচরণ ওই স্টোরের কর্মীদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছেনা তো? তাই বলছি শপিং করার সময় প্রাথমিক ভাবে কয়েকটা কথা মাথায় রাখুন।
দারুণ একটা ড্রেস কিনেছেন। বাড়ি ফিরে ভালো করে দেখলেন হাতার কাছে একটা দাগ। বোঝাই যাচ্ছে তেল জাতীয় কোনও জিনিষের দাগ। মনটা খারাপ হয়ে গেলো তো? এরকম তো আমাদের সবার সঙ্গেই কখনোও না কখনোও হয়েছে। পোশাক ট্রায়াল দেওয়ার সময় অনেক সময়েই লিপস্টিকের দাগ লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চোখে মোটা করে কাজল দেওয়া থাকলে, সেখান থেকেও দাগ লাগতে পারে। পোশাক গলাবার সময় ঠোঁটজোড়া চেপে মুখের ভিতরে ঢুকিয়ে নিন। তাহলে লিপস্টিকের দাগ লাগার সম্ভাবনা কমে যায়।
অনেক সময় অপরিষ্কার হাতে পোশাক ট্রায়াল দেওয়ার সময়ও দাগ লেগে যায়। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন। আইসক্রিম বা স্ন্যাক্স জাতীয় কিছু খাওয়ার পর ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। অন্তত ওয়েট টিস্যু দিয়ে ভালো করে হাত মুছে নিন। তারপর কেনাকাটা করতে কোনও দোকানে যান।
এম্ব্রয়ডারির কাজ করা কোনও পোশাক দেখার সময় সাবধান থাকুন। অনেক সময় হাতের টানে সুতো খুলে যেতে পারে। মনে রাখবেন ওই সুতোর কাজে মিশে আছে কোনও শিল্পী বা কারিগরের পরিশ্রম আর ধৈর্য। তাই আপনার অসাবধানতা তাঁদের কাজের মর্যাদা হানি করতে পারে। এইধরনের কোনও পোশাক ট্রায়াল দেওয়ার সময় খেয়াল রাখুন আপনার কোনও গয়নার সঙ্গে কোনও সুতো আটকে যাচ্ছে কিনা।
ট্রায়াল দেওয়ার পর যদি সিদ্ধান্ত নেন পোশাকটি কিনবেন না, তাহলে তা সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট কর্মীর হাতে ফিরিয়ে দিন। অনেকেই পোশাক ট্রায়াল রুমের মেঝেতে ফেলে দিয়ে চলে আসেন। এটা একেবারেই ঠিক নয়। ভেবে দেখুন, অন্য কোনও ক্রেতা ওই পোশাকটি ট্রায়াল করতে পারেন।
পুজোর সময় এমনিতেই ভিড় থাকে।দোকানের কর্মীদের পক্ষে সবাইকে মনে রাখা সম্ভব নয়। তাই তাঁদের কাছে আশা করবেন না, যে আপনি আগের মাসে এই দোকানে কোন ড্রেসটি পছন্দ করে গিয়েছিলেন, এবং তাড়াহুড়োর চোটে কিনতে পারেননি-ইত্যাদি মনে রাখার। এই নিয়ে কোনও অভিযোগ করাও উচিৎ নয়। যদি তিনি মনে রাখেন, তাহলে তাঁর প্রশংসা করতে ভুলবেননা যেন।
অনেকেই আজকাল শপিং করতে এসে পোশাকের ছবি তোলেন। সেই ছবি মোবাইলে বন্ধুকে পাঠিয়ে তাঁর মতামত জানতে চান, তাঁকে সেই পোশাকটিতে মানাবে কিনা। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই দোকান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নেবেন।
আপনি যদি কোনও বুটিকে আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে যান ভালো কথা। আপনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যতক্ষণ খুশি ট্রায়াল দিতেই পারেন। কিন্তু যদি তা নাহয়, তাহলে ট্রায়াল রুম বেশিক্ষণ আটকে রাখবেন না। সেটা বুটিক বা কোনও লাইফস্টাইল স্টোর যেখানেই যান না কেন। অনেকেই ট্রায়াল রুমে একগাদা জামাকাপড় নিয়ে ঢোকেন। আবার একটা একটা পোশাক ট্রাই করার সময় সেলফি তুলেও সময় নষ্ট করেন।পুজোর সময় ক্রেতার চাপ স্বাভাবিক ভাবেই একটু বেশি থাকে। তাই অন্যের সুবিধার কথাও একটু মাথায় রাখুন।
কোনও বুটিকে কেনাকাটা করতে গিয়ে দেখলেন, কোনও পোশাকই আপনার জন্য মানানসই হচ্ছেনা। অথবা আপনার শারীরিক গঠনের কারণে পোশাকের ফিটিং পছন্দসই হচ্ছেনা। অনেক ক্রেতাই এই পরিস্থিতিতে দোকান সম্পর্কে নানা বিরূপ মন্তব্য করেন। এই ধরনের আচরণ মোটেই কাম্য নয়।
কোনও জিনিষ দেখে শুনে র্যােকে রেখে দেওয়ার পরে, তার উপরে আপনার আর কোনও অধিকার নেই। তাই অন্য কেউ যদি তা দেখেন বা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তা হলে কিচ্ছু করার নেই। আপনি আগে দেখেছেন বলে তা কেনার দাবী করতে পারেন না। এই নিয়ে অন্য ক্রেতার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াবেননা।
প্রত্যেকের তাড়া আছে। প্রত্যেকের কাজ আছে। তাই কেনাকাটা করতে গিয়ে বিলিং লাইনে দাঁড়িয়ে অধৈর্য হবেন না। বা অন্য কোনও ক্রেতাকে অ্যাটেন্ড করার সময় কোনও দোকানকর্মীকে আপনার প্রয়োজনটা আগে মেটানোর দাবী করবেনা না। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন।
ও হ্যাঁ বন্ধুর সঙ্গে শপিং করতে বেরিয়ে দোকানের মধ্যেই তার সঙ্গে গল্প জুড়ে দেবেননা।
ওদিকে হয়তো দোকানের কর্মী অপেক্ষা করে আছেন কোনও জিনিষ আপনি আদৌ কিনবেনা কিনা, সেই সিদ্ধান্ত জানার জন্য। তার অন্য কাজও আছে সেই কথাটা মাথায় রাখুন। কেনাকাটা করে কোনও কফিশপে বসে জমিয়ে গল্প করুন।
পুজোর প্রস্তুতিতে চোখ রাখুন এই বিভাগে। আগামী পর্বে থাকছে এবারের পুজোর শপিং ট্রেন্ড।