রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুরসভা প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্মরণসভায় এক মন্ত্রীকে পাঠিয়ে সৌজন্য দেখাল। আর কলকাতা পুরসভা মহাজাতি সদনের ভাড়া না নিয়ে সেই একই মনোভাব দেখাল। বুধবার মহাজাতি সদনে প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাজ্য বিজেপি স্মরণসভার আয়োজন করে। রাজ্য সরকার সৌজন্য দেখিয়ে সেই স্মরণসভায় যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে পাঠায়। মহাজাতি সদনে অনুষ্ঠান করার জন্য রাজ্যদলকে কোনও ভাড়া গুনতে হয়নি। পুরসভা অটলবিহারীর প্রতি সৌজন্য দেখিয়ে ভাড়া মকুব করেছে।
তাই, এদিন বিজেপি–র দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা তৃণমূল সরকারের প্রতি প্রশংসাসূচক মন্তব্য করলেন। বাংলার এই দুই নেতা হলেন, দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহা। বিজেপি–র অন্যতম জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা সভায় রাজ্য সরকারের সৌজন্য প্রদর্শনের কথা বলেন। ভাড়া মকুবের জন্য দিলীপ ঘোষ পুরসভাকে ধন্যবাদ জানান।
তবে, রাহুল সিনহা সিপিএমের সমালোচনা করে প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকার ইন্দ্রনীল সেনকে পাঠিয়েছেন, কিন্তু জ্যোতি বসুর পার্টির লোক একজনকেও পাঠাতে পারলেন না? সিপিএম কেন যোগ দিল না? অটলজি ছোঁয়াছুঁয়ির রাজনীতি করতেন না। তিনি বড় মাপের মানুষ ছিলেন। কিন্তু তাঁর স্মরণসভায় ছোঁয়াছুঁয়ি এড়াতে অনেক আমন্ত্রিতই উপস্থিত হলেন না। সবাই মিলে স্মরণসভায় তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলী দেওয়া গেল না। কলকাতায় তাঁর মূর্তি স্থাপন করা হোক। তখন সবাই মিলে শ্রদ্ধাঞ্জলী দেওয়া যাবে বলে আশা করি।
ইন্দ্রনীল সেনকে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর ছবিতে ফুল দেওয়ার জন্য ডাকা হয়। তিনি পুষ্পস্তবকটি দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর অন্য কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য মহাজাতি সদন ছাড়েন।
এদিনের স্মরণসভায় অন্য দল বলতে ছিলেন কেবল রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও লোক জনশক্তি পার্টির প্রতিনিধি। বাংলার রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ও মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ওঁর জীবন ছিল সরল, মন ছিল অনুভূতিপ্রবণ। প্রথম দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের কালে অটলবিহারী সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে মাত্র ১ ভোটের জন্য হারেন। ১ ভোট ‘যোগাড়’ করা ‘কঠিন’ নয়। কিন্তু তিনি হেরেছেন তবু ‘কৌশলে’ জেতার চেষ্টা করেননি।
কবি শঙ্খ ঘোষের নাম না করে তথাগত রায় তাঁর সমালোচনা করেন। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ন তুলে শঙ্খ ঘোষ সরস্বতী পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। কিন্তু তথাগতর মতে, নরেন্দ্র মোদী অটলজির উপদেশ মেনে রাজধর্ম পালন করেছিলেন। এখনও তাই করছেন। দিলীপ ঘোষ প্রায় এক সুরে বলেন, মোদীজি তাঁর কাজ আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি অটলবিহারীর যোগ্য উত্তরসূরি। এদিনের অনুষ্ঠানে দিল্লি থেকে দলের দুই নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও শিবপ্রকাশ যোগ দেন।