আপনি জানেন অতিমাত্রায় মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা একশো ভাগ। শুধু তাই নয় ওজন বেড়ে যেতে পারে।দাঁত ক্ষয়ে যেতে পারে। আবার অকালে বুড়িয়েও যেতে পারেন। এতো সব কিছু জানার পরেও আপনি মিষ্টিজাতীয় খাবার দেখলে নিজেকে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
আসলে মিষ্টি খেতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের পক্ষে কাজটা মোটেই সহজ নয়। তবে অসম্ভবও নয়। লাইফস্টাইলে একটু বদল আনুন। দেখুন আগের মতো আর বেশি বেশি মিষ্টি খাচ্ছেন না।
যাঁরা মিষ্টি খাওয়ার উপর রাশ টানার কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য রইলো কিছু টিপস। বাকিটা নির্ভর করছে আপনার মিষ্টি না খাওয়ার ইচ্ছেশক্তির উপর।
প্রথমেই বলি মিষ্টি খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দেওয়াটা মোটেই কাজের কথা নয়। দু’দিন কষ্ট করে মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকলেন। তিন দিনের দিন আর থাকতে পারলেন না। তার চেয়ে বরং একটা প্ল্যান করুন। সপ্তাহে একদিন মিষ্টি খান। ইচ্ছে মতো। ফলে মিষ্টি খাওয়ার ক্রেভিংস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
খেয়াল করে দেখবেন সুগার ক্রেভিংস কিন্তু খুব বেশিক্ষণ থাকেনা। মাত্র কয়েক মিনিট। এই সময়টা নিজেকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখুন। হাতের কাজগুলো মিটিয়ে নিন। বই পড়ুন। গান শুনুন। মিষ্টি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এর চেয়ে কার্যকরী টিপস হতেই পারেনা।
স্ট্রেস থেকেও অনেক সময় সুগার ক্রেভিংস হয়। এরকম সময় চকোলেট না খেয়ে বরং একটু পার্কে হেঁটে আসুন। ক্যামোমাইল চা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। পছন্দের বিউটি ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। বাড়িতেও মুখে ফেস মাস্ক লাগিয়ে বিশ্রাম নিন। খানিকটা ভালো বোধ করলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে আপনা থেকেই কমে যেতে পারে।
ও হ্যাঁ। এক গ্লাস জল খেয়ে দেখতে পারেন। অবাক হবেন না। অনেক সময় জল তেষ্টা পেলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে বেড়ে যেতে পারে। আমরা এটা বুঝতে পারিনা। তাই এরপর থেকে সুগার ক্রেভিংস হলেই জল খান। তেষ্টা কমে গেলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা তেমন নাও হতে পারে।
আপনি সময়মতো খাওয়া দাওয়া করেন তো? ধরুন অফিস বেরনোর তাড়ায় ব্রেকফাস্ট স্কিপ করলেন। কিংবা দুপুরে কাজের এমন চাপ যে লাঞ্চটাও খেলেন না। এরকম চলতে থাকলে আপনার সুগার ক্রেভিংস কেউ আটকাতে পারবেনা। কারণ কিছুক্ষণ না খেয়ে থাকলেই আমাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কমে যায়। সেই ঘাটতি পূরণ করার জন্য মিষ্টি খাওয়ার প্রবল ইচ্ছে তৈরি হয় শরীরকে সেই সুযোগটা দেবেন কেন? তার চেয়ে সময়ে খাবার খান।
শুধু খেলে হবেনা। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রসেসড ফুড খাওয়াও কম করুন। চিপস, প্যাকেজড ফ্রুট জুস, ইত্যাদি জাতীয় খাবারেও প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। পাউরুটি বা পাস্তার মতো খাবারেও চিনি থাকে। আপনার রোজকার খাবারে বরং বেশি করে শাক সবজি, ফল, মাছ চিকেনের মতো খাবার রাখুন।
চিনির বিকল্প হিসেবে মেপল সিরাপ, সিনামন, কোকোনাট সুগার, র-হানি ইত্যাদি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। সিনামন বা দারুচিনি সুইট ক্রেভিংস কমানোর জন্য দারুণ।
এসবের সঙ্গে মনে করে নিয়মিত শরীর চর্চা করুন। শারীরিক ভাবে অ্যাক্টিভ থাকলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে এমনিতেই কমে যাবে।