ক্রোয়েশিয়ার গ্রুপ পর্ব
‘ডি’ গ্রুপে কালিনিনগ্রাদে নাইজেরিয়ার মুখোমুখি হয় ক্রোয়েশিয়া। ওঘেনেকারো এতেবোর আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় তারা। তারপর দ্বিতীয়ার্ধে লুকা মদরিচের পেনাল্টিতে ২-০ গোলের সহজ জয় নিশ্চিত করে ক্রোয়েটরা। ১৯৯৮ সালে অভিষেকের পর প্রথমবার জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হয় ক্রোয়েশিয়ার।
দ্বিতীয় ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে পাত্তাই দেয়নি ক্রোয়েশিয়া। প্রথমার্ধে গোলশূন্য থাকলেও গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরোকে বোকা বানিয়ে ৩-০ গোলে জেতে তারা। আন্তে রেবিচ, মদরিচ ও ইভান রাকিতিচ করেন গোল। টানা দুই ম্যাচ জিতে ২০ বছর পর প্রথমবার শেষ ষোলোর টিকিট কাটে ক্রোয়েটরা।
নকআউট নিশ্চিত করায় গ্রুপের শেষ ম্যাচে আমূলে বদলে ফেলা দল নিয়ে মাঠে নামে ক্রোয়েশিয়া। আগের ম্যাচ খেলা কেবল ইভান পেরিশিচ ও মদরিচ ছিলেন আইসল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে। মিলান বাদেলের গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েটরা। কিন্তু জিলফি সিগুর্দসন পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরালে ৯০ মিনিটের গোলে পেরিশিচ দলের শতভাগ সাফল্য ধরে রাখেন। ২-১ গোলে জিতে ক্রোয়েশিয়া হয় গ্রুপসেরা।
ক্রোয়েশিয়ার নকআউট পর্ব
শেষ ষোলো: ডেনমার্কের বিপক্ষে নিঝনি নোভগোরদে নকআউটের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ক্রোয়েশিয়া। প্রথম মিনিটে মাথিয়াস জর্গেনসেনের গোলে এগিয়ে যায় ডেনিসরা। যদিও মারিও মানজুকিচের ৪ মিনিটের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েটরা।
তারপর নির্ধারিত ৯০ মিনিট পার হলেও কোনও দল পায়নি গোলের দেখা। এমনকি অতিরিক্ত সময়ও শেষ হয় ১-১ গোলে। ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে ৩-২ গোলের জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।
কোয়ার্টার ফাইনাল: এই পর্বে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল ক্রোয়েশিয়াকে। স্বাগতিক রাশিয়া নির্ভার থেকে খেলতে নেমে দেনিস চেরিশিভের দুর্দান্ত গোল পিছিয়ে দেয় তাদের। ৩১ মিনিটের এই গোলের জবাব দেয় ক্রোয়েশিয়া বিরতির ৬ মিনিট আগে। আন্দ্রে ক্রামারিচ ফেরান সমতা। নির্ধারিত সময় ১-১ থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
১০১ মিনিটে দোমাগোজ ভিদা দ্বিতীয় গোল করলে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল ক্রোয়েটরা। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে ফের্নান্দেসের গোল আবার তাদের ফেলে টাইব্রেকার পরীক্ষায়। ২-২ গোলে অতিরিক্ত সময় শেষ হলে পেনাল্টি শুট আউটে ৪-৩ গোলের জয়ে ২০ বছর পর প্রথম সেমিফাইনালে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।
সেমিফাইনাল: টানা দুটি টাইব্রেকারে জেতায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রোয়েশিয়াকে ফেভারিট মানেনি অনেকে। সেটাকে আরও গ্রহণযোগ্য হয় তারা ৫ মিনিটে গোল খেলে। কিয়েরান ট্রিপিয়ারের চমৎকার ফ্রি কিক গোলে ইংল্যান্ড এগিয়ে যায়।
কিন্তু এই ধাক্কায় পড়ে যায়নি ক্রোয়েশিয়া। মুহুর্মুহু আক্রমণে ইংলিশ রক্ষণভাগ তটস্থ রাখার পর পেরিশিচের গোলে সমতা ফেরায় তারা। ১-১ গোলে নির্ধারিত সময় থাকার পর ম্যাচ যায় অতিরিক্ত সময়ে। মানজুকিচের ১০৯ মিনিটের গোলে ২-১ এ জিতে প্রথমবার ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়ে ক্রোয়েশিয়া।