প্রশ্ন— হিন্দুধর্ম সম্পর্কে আপনার ধারণা কি?
মমতা— স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ধর্মের বিশ্বায়ণের কথা। হিন্দু ধর্ম সার্বজনীন এবং বিশ্বজনীন। তুমি (মানে বিজেপি) তোমার জঙ্গি কর্মসূচি দিয়ে, তোমার ঘৃণার রাজনীতি দিয়ে এভাবে দেশকে ভাগ করতে পারোনা। তোমরা হিন্দুদের বদনাম করে দিচ্ছো। হিন্দুরা এর অনেক উর্দ্ধে। তারা অনেক বেশি উদার। আমি নিজেও একজন উদার হিন্দু, কোনওভাবেই জঙ্গি মানসিকতাসম্পন্ন নই।
প্রশ্ন— আপনি তো এখন বিজেপি বিরোধী জোট গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনি কী মনে করেন জোট গড়ে ওঠার আদৌ কোনও বাস্তবতা রয়েছে?
মমতা— কেন বাস্তবতা থাকবে না, যথেষ্ট বাস্তবতা রয়েছে। আমি এ ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। আমার বক্তব্য খুবই সোজা। যে যার মতো কাজ করে গেলেই হবে। যে দল যেখানে শক্তিশালী, তাদের সেখানে লড়তে দেওয়া হোক। যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে তারা লড়াই করুক। আর যেখানে আঞ্চলিক দলগুলি শক্তিশালী, সেখানে তারা লড়াই করুক। নির্বাচনের পরে একটি অভিন্ন কর্মসূচি তৈরি করা যাবে।
প্রশ্ন— আপনি কী গোটা দেশে একের বিরুদ্ধে এক, এই ফর্মুলায় লড়াইয়ের কথা বলছেন?
মমতা— না, আমি সেকথা বলতে চাইনি। আমি বলতে চাইছি যদি ৭৫ % (পার সেন্ট )আসনে এই ফর্মুলা প্রয়োগ করা যায়, তাহলেই কেল্লা ফতে। যদি মায়াবতীজী আর অখিলেশ মিলে এই কাজটা উত্তরপ্রদেশে করতে পারে, আমি বলছি তাহলেই কাজ হয়ে যাবে। এটা একটি বড় পরিবারের মতো। নির্বাচনের পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
প্রশ্ন— তাহলে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপি বিরোধী জোটে সামিল হয়ে লড়াই করবে?
মমতা— কেন সামিল হবে না? ওরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে, মানুষের ওপরে অত্যাচার নামিয়ে আনছে, মানুষে মানুষে বিভেদ এবং ঘৃণা ছড়াচ্ছে। ওরা একশো “হিটলারের” সমান। সবাই বুঝতে পারছে অবিলম্বে ওদের পতন ঘটানো প্রয়োজন। দেশের মানুষ এইসব আর মেনে নিতে পারছে না।
প্রশ্ন— কোনও কোনও আঞ্চলিক দল কংগ্রেসকে বিরোধী জোটের বাইরে রাখতে চাইছে। তার কী হবে?
মমতা— তাদর সেই বাধ্যবাধকতা হয়তো আছে। কিন্তু আমি কাউকেই, এমনকী শিবসেনাকেও জোটের বাইরে রাখার পক্ষপাতী নই। নির্বাচনের পরে যদি দেখা যায় কংগ্রেস বেশি আসন পেয়েছে, তখন তারাই নতৃত্ব দেবে। যদি দেখা যায় আঞ্চলিক দলগুলি বেশি আসনে জয়ী হয়েছে, তখন তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে আমি চন্দ্রবাবু নাইডু, চন্দ্রশেখর রাও, এইচডি কুমারস্বামী এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে একমত।
(সংগৃহিত)