এখন ভরা বর্ষা৷ তবে বর্ষা মানেই শরতের আগমনীবার্তা৷ আর শরৎ মানেই মা আসছেন৷ চারদিকে পুজো পুজো গন্ধ৷ তবে প্রতিমাশিল্পীদের জন্য কিন্তু ইতিমধ্যেই ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে৷ প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে৷ আর যেসব মূর্তি কলকাতা থেকে সুদূর বিলেতে পাড়ি দেবে তাদের অধিকাংশ ইতিমধ্যে রওনাও দিয়ে দিয়েছে৷ বাকিরা রওনা হল বলে!
যেমন হাওড়া থেকে মা দূর্গা পারি দিচ্ছে আয়ারল্যান্ড। আগামী ১৫ জুলাই খিদিরপুর ডক থেকে জাহাজে আয়ারল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেবে হাওড়ার পঞ্চাননতলার বোষ্টম পাড়া লেনে তৈরি হওয়া দুর্গাপ্রতিমা। গত চার মাস ধরে ফাইভারের এই প্রতিমা তৈরি হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের ডাফটিন শহরে বসবাসকারী বাঙালিদের একটি সংগঠন ‘সুজন’। সেখানেই এবার পূজিত হবেন এই প্রতিমা। গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফ্টসের ছাত্র সৈকত বসু গত চার মাস ধরে ফাইভার দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যেই এই প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সৈকত বলেন, আমার এক বন্ধুর মামা আয়ারল্যান্ডে থাকেন। তাঁর মাধ্যমেই এই সংগঠনের সঙ্গে পরিচয়। তাঁরা আমায় কয়েকমাস আগে এই প্রতিমা তৈরি করার জন্য অনুরোধ করেন। আমি এর আগেও ফাইভারের মূর্তি তৈরি করেছি। কিন্তু, দুর্গাপ্রতিমা এই প্রথম তৈরি করলাম। ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে দুর্গা প্রতিমা তৈরির জন্য আমাকে অনুরোধ করা হয়। আগামী ১৫ জুলাই এই প্রতিমা জাহাজে আয়ারল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেবে। পুজোর আগেই সেখানে তা পৌঁছে যাবে। আমার তৈরি প্রতিমা বিদেশে যাচ্ছে, এই ভেবে আমার খুবই ভালো লাগছে। সৈকত বলেন, আমি প্রতিমার ছবি ওই সংগঠনের সদস্যদের পাঠিয়েছি। তাঁদেরও প্রতিমা দেখে ভালো লেগেছে।
প্রায় ১৫০ কেজি ফাইভার দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে মাটির প্রতিমা তৈরি করা হয়। তারপর প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে ছাঁচ তৈরি করা হয়। ওই ছাঁদের উপর ফাইভার দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। গত মার্চ মাস থেকে এই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই প্রতিমার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ভারতীয় টাকায় এই প্রতিমার দাম দু’লক্ষ টাকা। কিন্তু, এই প্রতিমা পাঠানোর জন্য প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হবে। আয়ারল্যান্ডের ওই সংস্থাই এই প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার খরচ বহন করছে। ইতিমধ্যেই জাহাজে প্রতিমা পাঠানোর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।